জাতীয়

কেরানীগঞ্জে বিদ্যালয় থেকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পাশের হার বেশি

  প্রতিনিধি ১০ জুলাই ২০২৫ , ৯:০৮:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

Images (98)

নিউজ ডেস্ক: এবছর সারাদেশে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ে সাধারণ বোর্ডের ছাত্রছাত্রীরা ভালো রেজাল্ট করলেও কেরানীগঞ্জে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। উপজেলাটিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের থেকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা ভালো রেজাল্ট করেছে। এক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের শতকরা পাশের হার ৬৮.০৮ শতাংশ এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পাশের হার ৯৫.৯৪ শতাংশ। বেশ কয়েকটি ভালো প্রতিষ্ঠানে বিগত বছরের তুলনায় এ বছরের রেজাল্ট অত্যন্ত খারাপ হয়েছে।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৪০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর ৬৩৭৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এদের মধ্যে ৪ হাজার ৩৩৩ জন কৃতকার্য হয়েছে। পাশের হার শতকরা ৬৮.০৮ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি পাশের হার ছিল কেরানীগঞ্জ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ নামের প্রতিষ্ঠানটিতে,তাদের পাশের হার শতকরা ৮৭.৬২ শতাংশ। অপরদিকে সবচাইতে খারাপ ফলাফল করেছে ন্যাশনাল উচ্চ বিদ্যালয়,তাদের পাশের হার শতকরা ২৬.৪৭ শতাংশ। এবছর উপজেলার ৪০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৫৪ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।

অপরদিকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ৮টি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৩২৭ জন পরীক্ষার্থী এ বছর পরীক্ষা অংশগ্রহণ করেছে।এদের মধ্যে ৩১৩ জন কৃতকার্য হয়েছে। পাশের হার শতকরা ৯৫.৯৪ শতাংশ,২৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কেরানীগঞ্জে এবছর ৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে ২২০ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা অংশগ্রহণ করে।এদের মধ্যে ২০৭ জন কৃতকার্য হয়েছে। পাশের হার ৯১.৬৪ শতাংশ,৩০ জন জিপিএ- ৫ পেয়েছে।

অধ্যাপক হামিদুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি স্বনামধন্য বিদ্যালয়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত। বিগত বছরগুলোতে অধ্যাপক হামিদুর রহমান স্কুল এন্ড কলেজের ফলাফল ৭০ থেকে ৭৭% এর মধ্যে ছিল। তবে এবছর প্রতিষ্ঠানটিতে পাশের হার ৩৯.৩৭ শতাংশ। হঠাৎ এমন বিপর্যয়ের কারণ কি?

এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫ই আগস্ট এর পর থেকে আমাদের বিদ্যালয়ের কোন কমিটি নেই। একটি এডহক কমিটি করা হয়েছিল,সেটিও বাতিল করা হয়েছে। এবছর টেস্ট ও প্রি-টেস্ট পরীক্ষায় অনেক ছাত্রছাত্রী খারাপ রেজাল্ট করছিল। এলাকার নেতাদের চাপে ফেল করা ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়েছে। আমার বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী অংক পরীক্ষা খারাপ করেছে। অংক পরীক্ষার দিন আমাদের কেন্দ্র তেঘরিয়া স্কুলে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে অতিরিক্ত গার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এতে শিক্ষার্থীরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পরীক্ষা ভালো ভাবে দিতে পারেনি। এছাড়া আরো অনেকগুলো কারণের মধ্যে আমাদের শিক্ষকদের ব্যর্থতাও রয়েছে।

 

সবচাইতে খারাপ ফলাফল করা ন্যাশনাল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোরশেদ আলমের কাছে কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশ কিছু কিন্ডারগার্টেনের বাচ্চাদের আমার এখান থেকে রেজিস্ট্রেশন করানো হয়েছিল। তারাই খারাপ রেজাল্ট করেছে। আমার নিজের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট ভালো ছিল। ইনশাল্লাহ আগামীতে কিভাবে ভালো করা যায় সে বিষয়ে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।

 

সার্বিক বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাকির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা পরবর্তী এ বছর পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা হয়েছে। তাই ফলাফল কিছুটা খারাপ হয়েছে। যারা ভালোভাবে প্রিপারেশন নিয়েছিল তারাই পাশ করেছে।এছাড়াও বিগত বছরগুলোতে রাজনৈতিক প্রভাব ছিল। পাশের হার বেশি দেখানোর জন্য যেন-তেন ভাবে খাতা দেখা হতো। এ বছর সেটা হয়নি।

ফলাফল বিপর্যয়ের কারণগুলো আপনি অনুসন্ধান করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ফলাফল খারাপ করা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ডেকে মিটিং করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এন/টি #

 

 

 

আরও খবর

Sponsered content