প্রতিনিধি ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৭:০৭:০১ প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতিবেদনে বলা হয়,ডেঙ্গু ভাইরাসের যে চারটি ধরন রয়েছে (ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ এবং ডেন-৪) তার প্রত্যেকটির উপর এ টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখা গেছে,এ টিকা চারটি ধরনের বিরুদ্ধেই কার্যকর। টিকার নাম দেয়া হয়েছে টিভি-০০৫ (টেট্রাভেলেন্ট)।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউভিএম) লার্নার কলেজ অব মেডিসিনের ও বাংলাদেশের মহাখালীতে অবস্থিত আইসিডিডিআরবির(কলেরা হাসপাতাল) বিজ্ঞানী মোহাম্মদ শফিউল আলম, জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী রাশিদুল হক, সাজিয়া আফরিন ও মো.মাসুদ আলম এ টিকার সফল পরীক্ষা করেছেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশে টিভি-০০৫ টিকার পরীক্ষা হয়েছে ২০১৬ সালের ১৩ মার্চ থেকে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এতে অংশ নেন ১৯২ জন, তাঁরা সকলেই স্বেচ্ছায় অংশ নেন।
প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ,মহিলা ,শিশু, কিশোর এই চারটি বয়সের শ্রেণিতে বাছাই করে টিকা বা প্লাসিবো করা হয়। অর্থাৎ প্রতি দলে ৪৮ জন করে অংশগ্রহণ করেছিল। এসব ব্যক্তির কারও কারও আগেই ডেঙ্গু হয়েছিল আবার কারও হয়নি।অংশগ্রহণকারীরা সবাই ছিলেন বাংলাদেশি। টিকার বেশির ভাগ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছিল সামান্য। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মাঝে অন্যতম ছিল ফুসকুড়ি বা র্যাশ।
গবেষক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, যারা টিকা নিয়েছেন তাদের আমরা ২০২০ সাল পর্যন্ত দেখেছি। তাদের কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হননি।এই টিকার একটি ডোজই একজনকে সুরক্ষা দিতে পারে। তবে এ টিকা নিয়ে আরও গবেষনার প্রয়োজন রয়েছে । কারণ বাংলাদেশে এর দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল বা পরীক্ষা হয়েছে। বিশ্বের নানা দেশে টিকাটি ৪২টি বিভিন্ন ধাপের ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে । ভারতের এর তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। ডেঙ্গুর হাত থেকে মানুষকে সুরক্ষা দিতে এর জোর সম্ভাবনা আছে। আমরাও তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল করার জন্য চেষ্টা করছি।
জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন এই টিকার সফল পরীক্ষাকে স্বাগত জানিয়ে দুটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এই টিকা যাদের এক বা একাধিকবার ডেঙ্গু হয়ে গেছে তাদের দেয়া যাবে কি না এবং এর দাম সাধারণ মানুষের জন্য সাশ্রয়ী হবে কিনা।
ডা. রাশিদুল হক বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণে টিভি-০০৫ টিকার গবেষণা করতে পেরে গর্ববোধ করে বলেন,একটি কার্যকর এবং টেট্রাভালেন্ট ডেঙ্গু টিকা বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব গুরুতর হয়ে উঠছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে ৬১ জন ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন আগে। টিকার ট্রায়াল শুরুর তাদের পরীক্ষা করে এটা বোঝা গেছে। তাই যাদের হয়েছে তারাও নিতে পারবেন। এই ৬১ জনের টিকা নেয়ার পর আর ডেঙ্গু হয়নি। বরং তাদের অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি ছিল। টিকাটি আবিস্কার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (এনআইএইচ)।