জাতীয়

কেরানীগঞ্জে মহাসড়কে নির্মাণ সামগ্রী রেখে যানজট সৃষ্টি,ভোগান্তিতে জনসাধারণ

  প্রতিনিধি ৮ অক্টোবর ২০২৪ , ১১:৫৬:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ

0Shares
Oplus 0
oplus_0

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার কেরানীগঞ্জে মহাসড়কে নির্মাণ সামগ্রী রেখে যানজট সৃষ্টি ও ফুটপাতে রড রেখে জনসাধারণের ভোগান্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে কেরানীগঞ্জের কদমতলী গোল চত্বর হয়ে ২৫ টি জেলার যানবাহন ও যাত্রী এই রাস্তায় চলাচল করে। গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটিতে নির্মাণ সামগ্রী রেখে ভবন নির্মাণ করায় ভোগান্তিতে পড়েছে কয়েক লক্ষাধিক জনসাধারণ। আর নির্মাণ সামগ্রী রাস্তায় রাখা দ্বীন ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী হাজী শামসুল হক অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না।

সোমবার (৭ অক্টোবর ) বিকেলে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের কানেক্টিং রোড কদমতলী গোল চত্বরের ৫০ গজ দক্ষিণে সড়কের ওপর রাখা আছে বালি ও পাথরের স্তুপ। এর পাশাপাশি ফুটপাত জুড়ে রাখা হয়েছে রডের বান্ডেল। রাস্তার পাশেই কাজ করছে বেশ কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক। নির্মাণ শ্রমিকদের যন্ত্রপাতি পরিষ্কারের জন্য পানির লাইন বসানো হয়েছে ফুটপাতের ওপর। সংবাদ সংগ্রহের জন্য ছবি তোলার সময় দেখা যায় পাথরের স্তুপের উপর দিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান আসার সময় ঢাকা-ভাঙ্গা রোডে চলাচলকারী বসুমতি পরিবহনের একটি বাসে ধাক্কা লাগে। এতে বসুমতি পরিবহনের গাড়ির দুটি গ্লাস ভেঙে যায় এবং ভিতরে বসে থাকা একজন যাত্রী আহত হয়। পরে পথচারী ও স্থানীয়রা মিলে কাভার্ড ভ্যানের চালকের কাছ থেকে এক হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে বাসের ড্রাইভারকে দিয়ে বিষয়টি মিটমাট করে।

মহাসড়কে নির্মাণ সামগ্রী রেখে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়া সিএনজি চালক আব্দুর রহিম বলেন, এক সপ্তাহ যাবৎ রাস্তার মধ্যে পাথরের স্তুপ রেখে যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। এই সড়কটিতে দুই লেনে গাড়ি চলাচল করে কিন্তু নির্মাণ সামগ্রী রাখায় এক লাইনে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে করে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। দেশ তো স্বাধীন হয়েছে কিন্তু এখনো পর্যন্ত বড় বড় লোকদের ক্ষমতার দম্ভ কমেনি।

রাস্তার ফুটপাত দিয়ে হেঁটে চলাচল করা আইয়ুব হোসেন বলেন, দীর্ঘ যানজটের কারণে বাস থেকে নেমে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হেঁটে ফুটপাত দিয়ে চলাচল করছি এখন রাস্তার ওপর রড রেখে দেয়ার কারণে ফুটপাত দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে রাস্তায় রাখা বালি ও পাথরের উপর দিয়েই হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে। বিষয়টি কদমতলী গোল চত্বরে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট কে জানালাম,তবে তিনি অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন এ বিষয়ে কিছুই করতে পারবো না ।

জানা গেছে রাস্তায় নির্মাণ সামগ্রী রাখা দ্বীন ফার্নিচারের মালিক হাজি শামসুল হক এলাকার অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি। বিগত জোট সরকারের আমলে নির্মাণাধীন ভবনের জায়গাটি তার বেদখল ছিল। ৫ ই আগস্ট সরকার পতনের পর ভাড়াটে লোকজন নিয়ে জায়গাটি তিনি দখলে নেন। জায়গাটি নিয়ে মালিকানা বিরোধ থাকায় কিছুদিন আগে হাজী বাহার নামে বিএনপির এক নেতাকে হাজী শামসুল হকের লোকজন ডেকে নিয়ে মারধর করে। এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও টেলিভিশনে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এরপর থেকে শামসুল ইসলামের দম্ভ আরো বেড়ে গেছে। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়েই তিনি মহাসড়ক দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন এমন অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।

রাস্তার উপর নির্মাণ সামগ্রী রেখে জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টি করা প্রসঙ্গে জানতে শামসুল হকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিনাত ফৌজিয়া বলেন, রাস্তার ওপর নির্মাণ সামগ্রী রাখার কোন নিয়ম নেই। নির্মাণ সামগ্রী মহাসড়ক এর উপর রেখে যানজট সৃষ্টি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

#এন/টি

 

0Shares

আরও খবর

Sponsered content